Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
সাদা মাটির পাহাড়
স্থান
বিপিঞ্জ বাজার
কিভাবে যাওয়া যায়
বিরিশিরি থেকে সমেশ্বরী নদী নৌকাযোগে পারাপার হয়ে শিবগঞ্জ বাজার থেকে রিক্সাযোগে অথবা মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া যায় ও একই ভাবে ফিরে আসা যায়। ভাড়া বাবদ আনুমানিক ২০০.০০/= টাকা।
বিস্তারিত

বিজয়পুর সাদা মাটির পাহাড়। এটি  বিরিশিরি অনন্য সৌদর্য স্থান সেই সাথে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে প্রতিনিয়ত। সাদামাটির পাহাড় বিরিশিরির অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে চীনামাটির পাহাড়, যার বুক চিরে জেগে উঠেছে এই নীলচে-সবুজ পানির হ্রদ। সাদা মাটির মাঝে রঙটাকে যেন আরও বেশি গাঢ় করে দিয়েছে। তবে বিরিশিরি এসেই আপনি এ সুন্দর দৃশ্য আপনি দেখতে পারবেন না। আপনাকে যেতে হবে আরেকটু দূর বিজয়পুর চীনা মাটির পাহাড়ে। দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও এর আশপাশের এলাকায় রয়েছে চিনামাটির খনি। চিনামাটি মূলতঃ সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল। খনিজ সম্পদ ব্যুরোর ১৯৫৭ সালের তথ্যানুযায়ী, এ এলাকায় চিনামাটির মজুদ প্রায় ২৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এটি দিয়ে বাংলাদেশের তিনশ বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব বলে তখন বলা হয়েছিল। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো থেকে অনুমতি নিয়ে কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানী এখানকার চিনামাটি আহরণ করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক মাটি খননের কাজ করছে খনিজ প্রকল্পগুলোতে। এরপর তা পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিরামিক শিল্পের কারখানাগুলোতে। চিনামাটির এসব টিলা বা পাহাড় দেখতে খুবই মনমুগ্ধকর। বাহারি এর মাটির রঙ। লাল, সাদা, নীলাভ। এ যেন প্রকৃতিক আরেক নিসর্গ। দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের আড়াপাড়া ও মাইজপাড়া মৌজায় বিজয়পুরের সাদা মাটি অবস্থিত। বাংলাদেশের মধ্যে প্রকৃতির সম্পদ হিসেবে সাদা মাটির অন্যতম বৃহৎখনিজ অঞ্চল এটি।নেত্রকোণা জেলার উল্লেখযোগ্য প্রকৃতিক সম্পদ বিজয়পুরের সাদামাটি। ১৯৫৭ সালে ভূতত্ত্ব জরিপে দুর্গাপুর উপজেলা বাগাউড়া গ্রামে সর্বপ্রথম সাদা মাটির সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৫ সালে সরকারের খনিজ সম্পদ বিভাগ এ সাদামাটির পরিমান নির্ধারণের জন্য  ১৩টি কূপ খনন করে। ১৯৭৫, ১৯৭৮,১৯৮০ ও ১৯৮৩, সালে সরকার ব্যাপক ভাবে ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালায়। সন্ধান পায় পশ্চিমে ভেদীকুড়া থেকে পূর্বে গোপালপুর পর্যন্ত এলাকায় নিয়মিত ও অনিয়মিত স্তরে সাদামাটি । সাদামাটি এলাকাটির দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার, প্রস্থে ৬শ মিটার । অধিকাংশ সাদামাটির টিলা ১৫ থেকে ৪০ মিটার পর্যন্ত উচু । ভূপৃষ্ট থেকে অবতল কোণের দিকে ৬০ মিটার গভীর পর্যন্ত সাদামাটির অস্থিত্ব রয়েছে । এ সাদামাটির বাংলাদেশের চাহিদার সিংহভাগ পুরণ করে চলছে।  চীনে এ মাটির সর্বপ্রথম ব্যবহার শুরু হয়েছিল বলে অনেকে এ সাদামাটিকে চীনা মাটিও বলে থাকে। এ সাদামাটিকে বিজয়পুর অঞ্চল থেকে উত্তোলন হয় বলে বাংলাদেশে বিজয়পুর কে বা বিজয়পুর সাদামাটি বলা হয়। এ মাটিকে সাদামাটি বলা হলেও এর রং হালকা ধূসর থেকে সাদাটে রঙের। একবারে সাদা বলা যাবেনা। কোন স্থানে এটি নানা রঙের সমন্বয় লক্ষ্যকরা যায়। কোন কোন স্থানে মসৃন, কোথাও খসখসে। শুকনো এ মাটি শক্ত ও ভঙ্গুর। ভেজালে আটালো ও নরম হয়ে যায়।   বিজয়পুরের সাদামাটি রাসায়নিক বিশ্লেষনে মৃত্তিকা বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন সিলিকন অক্রাইড দশমিক ৪ থেকে ৬৮ শতাংশ। টাইটনিয়াম অক্রাইড দশমিক ৪ থেকে ২ শতাংশ। ক্যালসিয়াম অক্রাইড সামান্য হতে ১ শতাংশ। ম্যাগানেসিয়াম অক্রাইড সামান্য হতে দশমিক ৮ শতাংশ। প্লাষ্টিসিটি ২০ শতাংশ। এ মাটির আপেকি ঘণত্ব ২.৫৫।  ছোট বড় টিলা-পাহাড় ও সমতল ভূমি জুড়ে প্রায় ১৫.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০০ মিটার প্রস্থ এই খনিজ অঞ্চল। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ১৯৫৭ সালে এই অঞ্চলে সাদামাটির পরিমাণ ধরা হয় ২৪ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন, যা বাংলাদেশের ৩ শত বৎসরের চাহিদা পুরণ করতে পারে। সমেশ্বরী নদী পার হয়ে রিক্সা বা হোন্ডায় অর্ধ কাচা-পাকা রাস্তা দিয়ে বিজয়পুরের সাদামাটি অঞ্চলে যাওয়া যায়।